চৌগাছায় বোরো ধান কাটতে শ্রমিক সংকট

রানা মাহমুদ চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছায় বোরো ধান পাকা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানাচ্ছে মে মাসের প্রথমেই হতে পারে ঝড়-বৃষ্টি। এমন খবরে পাকা ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক। কিন্তু এক সাথে ধান পাকা শুরু হওয়ায় দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। অধিক দাম দিয়েও মিলছে না শ্রমিক তাই কৃষক ধান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে চৌগাছায় ১৮ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে বিভিন্ন জাতের বোরো ধান। রোপণের পর হতে আবহাওয়া অনুকূলে ছিল তাই ভালো ফলনের সম্ভাবনাও দেখা দেয়। কিন্তু ধান পাকার আগ মুহূর্তে প্রচ- তাপদাহে ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গতকাল রোববার উপজেলার স্বরুপদাহ, নারায়ণপুর ও সিংহঝুলী ইউনিয়নের বেশ কিছু মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, সোনালী ধানের শীষ দোলা দিয়ে যাচ্ছে ক্ষেতের পর ক্ষেতে। বোরো চাষিরা পাকা ধান কাটতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। অনেক কৃষকই পাচ্ছেন না শ্রমিক, তাই অপেক্ষায় আছেন শ্রমিক পেলেই ধান কেটে ঘরে তুলবেন। আর যারা শ্রমিক নামক সোনার হরিণ পেয়েছেন তারা খুবই ব্যস্ত ধান কেটে জমিতেই শুকিয়ে বাড়িতে নিচ্ছেন।
আবহাওয়া অফিস জানিয়ে দিয়েছে আগামী মাসের প্রথমে দেশে কালবৈশাখী ঝড় সাথে বৃষ্টি হতে পারে। এমন খবরে ধান নিয়ে কৃষকের কপালে ভাজ দেখা দিয়েছে। কষ্টের ফসল সুন্দরভাবে নিতে পারবেন বাড়িতে নাকি আবারও কেটে রাখা শুকনো ধান ভাসবে বৃষ্টির পানিতে !
স্বরুপদাহ ইউনিয়নের বহিলাপোতা গ্রামের কৃষক আমিনুর রহমান জানান, প্রায় ৩ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি, কিন্তু মাঠে এক সাথে সকলের ধান পেকে গেছে, দেখা দিয়েছে শ্রমিকের সংকট। মাঠে কাজ করা লোকজন বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দেশে চলে গেছে। যার কারণে ধান কাটা শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে বলে তিনি মনে করছেন। একই গ্রামের কৃষক মিঠুন ঘোষ, দুখে রাম ঘোষ, সাহেব আলীসহ অধিকাংশ কৃষক ৪/৫ বিঘা এমনকি তারও বেশি জমিতে ধান চাষ করে এখন বিপাকে আছেন। কৃষকরা জানান, জোনের চরম অভাব, শুনছি আবাহওয়া খুব খারাপ হবে এখন ধান নিয়ে কি করবো চিন্তায় খুম হারাম হয়ে গেছে। বর্তমানে ১ বিঘা জমির ধান কাটা, বাধা ও জালি দেওয়া বাবদ জোনেরা সাড়ে ৪ হাজার টাকা নিচ্ছেন। এতো খরচ করে কৃষক কিভাবে লাভবান হবে।
ধান কাটা কাজে নিয়োজিত রহমত আলী, সাগর হোসেন, শামীম হোসেন জানান, প্রচ- রোদ আর গরমের কারণে স্বাভাবিক কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বিরুপ এই আবহাওয়ায় আমরা খুব ভোরে এবং পড়ন্ত বিকেলে কাজ করছি। তারপরও শরীর ভাল রাখা যাচ্ছে না, অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, মে মাসের শুরুতে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা। সে কারণে আমরা কৃষকদের ধান কেটে বাড়িতে আনার পরামর্শ দিয়েছি, যাতে কৃষকরা কোন ধরনের সমস্যায় না পড়েন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *