চুয়াডাঙ্গায় পুড়ে যাচ্ছে ফসল

চুয়াডাঙ্গায় ক্রমাগত তীব্র ও অতি তীব্র তাপপ্রবাহের ফলে জমির ফসল পুড়ে যাচ্ছে। জমিতে সেচ দিয়েও কৃষকরা তাদের ফসল রক্ষা করতে পারছে না। তাপপ্রবাহে জমির ফসল পুড়লেও সে সব তথ্য নেই কৃষি বিভাগের কাছে। বারংবার এ জেলার ৪টি উপজেলায় পুড়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতির পরিমাণ জানাতে ব্যর্থ হচ্ছে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। চুয়াডাঙ্গায় টানা প্রায় এক মাস ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। যার কারণে এ বিপর্যয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হানুরবাড়াদী গ্রামের ধান চাষি আবুল চাঁদ বলেন, আমার ৬ বিঘা জমিতে বিনা-২৫ জাতের ধান চাষ করেছি। দেড় শ মণ ধান হতে পারে। ধান চাষে ৭০ হাজার টাকা মত খরচ হয়েছে। ধানে মাজরা পোকা দেখা দিয়েছে। কৃষি অফিসের লোকদের পরামর্শে ধান গাছের গোড়ায় পানি বাধিয়ে রেখেছি। এখনো কোন সমস্যা হয়নি। যদি সমস্যা হয় তবে খুবই ক্ষতিগ্রস্থ হবো।
একই গ্রামের চাষি দোয়াল্লিন বলেন, তাপে ফলন্ত কলা গাছের কাঁদি পড়ে যাচ্ছে। তরমুজের ফল ঝরে যাচ্ছে। বেগুন গাছে বেগুন ধরছে না। কচু গাছ রোদে পুড়ে যাচ্ছে। শসার ক্ষেত তাপপ্রবাহে সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। দেরিতে লাগানো ভুট্টা ক্ষেতেরও একই দশা। কোনভাবেই ফসল ধ্বংস ঠেকানো যাচ্ছে না। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ক্রমাগত সেচ দিয়ে কিছু ফসল ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আর কত টাকা ব্যয় করে সেচ দেয়া যায় ? তবুও ফসল রক্ষা করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
একই উপজেলার ভা-ারদহ গ্রামের ধান চাষি আনসার আলী ও খাইরুল ইসলাম বলেন, বিএডিসি’র দেওয়া পানি ঠিকমত পাচ্ছি। ধানে পানি নিতে এ মৌসুমে ৩ হাজার টাকা দিতে হবে। আমাদের জমির আশপাশে সকল জমিতে ঠিকমত পানি দেওয়া হচ্ছে। এতে কোন সমস্যা নেই। সরকার নির্ধারিত চার্জের চেয়ে বেশি ৩ হাজার টাকা ব্যয় করে বিএডিসির সেচ পাম্প থেকে আমাদের সেচ সুবিধা নিতে হচ্ছে। নগদ টাকা দিলে ঘন্টায় ৩০০ টাকা দিতে হয়। টাকা বেশি লাগলেও ঠিকমত সেচ সেবা পাচ্ছি। আশা করা যায় ধানের ভাল ফলন পাবো।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা জানান, চলমান তাপদাহের কারণে রবি মৌসুমে মাঠ পর্যায়ে যে বোরো ধান রয়েছে সেগুলো, সব্জি,ফল,ফসল রক্ষায় আমরা মাঠ পর্যায়ে চাষিদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রচার চালাচ্ছি। বোরো ধান দানা পর্যায়ে চলে গেছে। কাজেই ওই ধানী জমিতে ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখা, আম বাগানে পানি দেওয়া ও গাছে পানি স্প্রে করার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। অতি তাপবাহে কী কী ফসলের ক্ষতি হচ্ছে তা আমরা এখনো নির্দিষ্ট করতে পারিনি। তবে সেটা নিরূপণের চেষ্টা চলছে। উপজেলা পর্যায়ে কাজ চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *